জেনারেটর : সাব এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার(ইলেকট্রিক্যাল) পদে আবেদন করার পর, প্রাথমিক যাচাই-বাচাই এরপর আপনাকে রিটেন/ভাইবা পরিক্ষার সম্মুখীন হতে হয়, এই পরিক্ষার প্রশ্ন পত্রে আসা অতি পরিচিত একটি বিষয় হলোঃ জেনারেটর।
নিচে জেনারেটর সর্ম্পকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও জেনারেটর সর্ম্পকে সকল চাকরি প্রধানকারী সংস্থার বিগত সালের প্রশ্নের উওর দেওয়া হয়েছে।
1. জেনারেটর এর আর্মেচার রিয়াকশন কী?
আর্মেচারে উৎপন্ন কারেন্ট আর্মেচারের পরিবাহীর মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় পরিবাহীর চারপাশে একটা চুম্বক ক্ষেত্র তৈরী হয় । প্রধান পোলের চুম্বক ক্ষেত্রের উপর এই চুম্বক ক্ষেত্রের ( আর্মেচার কারেন্ট জনিত চুম্বক ক্ষেত্র ) প্রভাবকেই আর্মেচার রিয়াকশন বলে । আর্মেচার রিয়াকশনের কারনে জেনারেটরের টার্মিনাল ভোল্টেজ কমে যায় এবং ব্রাশে স্পার্ক হয় ।
নিম্নলিখিত উপায়ে আর্মেচার রিয়াকশন কমানো যায়ঃ
01. কমপেনসেটিং ওয়ান্ডিং ব্যবহার করে ।
02. ইন্টার পোল ব্যবহার করে ।
03. এয়ার গ্যাপের দৈর্ঘ্য বাড়াইয়া ।
04. ব্রাশের অবস্থান পরিবর্তন করিয়া ।
2. রেসিডুয়াল ম্যাগনেটিজম কী?
রেসিডুয়াল ম্যাগনেটিজম মানে অবশিষ্ট্য চুম্বকত্ব যাহা না থাকলে জেনারেটরে আদৌ ভোল্টেজ উৎপন্ন হয় না ।
a. রেসিডুয়াল ম্যাগনেটিজম নষ্ট হওয়ার কারনঃ
মেশিন অনেকদিন অব্যবহৃত থাকলে বা ঝাঁকুনি লাগলে বা ফিল্ড কারেন্ট উল্টা দিকে প্রবাহিত হলে রেসিডুয়াল ম্যাগনেটিজম নষ্ট হয় ।
b. রেসিডুয়াল ম্যাগনেটিজম ফিরিয়ে আনার উপায়ঃ
বাহির হতে ডিসি সাপ্লাই দিয়ে হারিয়ে যাওয়া রেসিডুয়াল ম্যাগনেটিজম ফিরিয়ে আনা যায় ।
3. ডিসি জেনারেটর এর প্যারালাল অপারেশনের শর্তগুলো লেখ
Polarity (+,-), terminal voltage (Vt), frequency, phase angle, phase sequence
01. জেনারেটর এর পোলারিটি একই হতে হবে ।
02. জেনারেটর এর বৈশিষ্ট্য একই হতে হবে ।
03. টার্মিনাল ভোল্টেজ সমান হতে হবে ।
a. Generator এর প্যারালাল অপারেশনের সুবিধা লিখ ।
01. সর্বোচ্চ মানের দক্ষতা পাওয়া যায় ।
02. গ্রাহকের সার্বক্ষনিক সাপ্লাই নিশ্চিত করা যায় ।
03. মেরামত ও ওভার হোলিং এর সুবিধা
04. ভবিষ্যৎ এ লোড এর সম্প্রসারন সুবিধা
4. Shunt Generator এর ব্যবহার লিখ ।
01. AC Generator এর Excitation সরবরাহ কাজে ।
02. AC Generator হতে Load এর দূরত্ব যেখানে কম সেখানে
03. Storage battery চার্জ করার কাজে ।
5. ডিসি জেনারেটরে ভোল্টেজ উৎপন্ন হওয়ার শর্ত :
01. ফিল্ডে অবশেষ চুম্বকত্ব থাকতে হবে ।
02. ফিল্ড কয়েলের কানেকশন সঠিক হতে হবে ।
04. শান্ট ফিল্ড রেজিস্ট্যান্স ক্রিটিক্যাল রেজিস্ট্যান্স এর চাইতে কম হতে হবে ।
04. ব্রাশ এবং কম্যুটেটর সঠিক জায়গায় মজবুত ভাবে আটকানো থাকতে হবে ।
05. আর্মেচারকে সঠিক দিকে ঘুরাতে হবে ।
আরো পড়তে পারেন: পার্কার সোলার প্রোব Instruments
6. কী কী কারণে জেনারেটর চালু হয় না ( Failure to build up ) তা লিখুন
উত্তর: জেনারেটর চালু হয় না হওয়ার কারণগুলো হলো:
01. রেসিডুয়াল ম্যাগনেটিজম না থাকলে ।
02. Shunt Field Resistance অত্যন্ত বেশি হলে ।
03. Shunt Field Circuit Open হয়ে গেলে ।
04. Shunt Field Circuit Short হয়ে গেলে ।
05. ব্রাশ ঠিকমতো বসানো না থাকলে ।
7. জেনারেটর এর উৎপাদিত ইএমএফ – এর পরিমাণ কী কী বিষয়ের উপর নির্ভর করে ?
উত্তর : জেনারেটরে উৎপাদিত ইএমএফ – এর পরিমাণ নিম্নলিখিত বিষয়ের উপর নির্ভর করে—
01. প্রতি পোলে ফ্লাক্স – এর উপর
02. আর্মেচার পরিবাহীর সংখ্যার উপর
03. পোল সংখ্যার উপর
04. আর্মেচারের ঘূর্ণনের উপর এবং
05. আর্মেচারের প্যারালাল পথের সংখ্যার উপর ।
8. জেনারেটর এর এবং Motor- এর মধ্যে পার্থক্যসমূহ বর্ণনা করুন
Generator
01. এটি Mechanical Energy কে Electrical Energy তে রূপান্তরিত করে
02. এটি Flemming’s এর Right hand rule অনুযায়ী চলে
03. এতে Exciter ব্যবহৃত হয়
04. Starter এর দরকার পড়ে না
Motor
01. এটি Electrical Energy কে Mechanical Energy তে রূপান্তরিত করে
02. এটি Flemming’s এর Left hand rule অনুযায়ী চলে
03. এতে Exciter ব্যবহৃত হয় না
04. Starter এর দরকার পড়ে
9. জেনারেটর এর Alternator – এর মধ্যে পার্থক্য কী ?
Generator
01. যে মেশিন Mechanical Energy কে Electrical Energy তে রূপান্তরিত করে তাকে Generator বলে
02. এটি AC and DC উভয় ক্ষেত্রে operation করতে পারে
03. Magnetic Field স্থির থাকে
04. Rotor থেকে input সরবরাহ করে
05. এটিতে Armature ঘোরে
06. Output EMF constant
Alternator
01. যে মেশিন Mechanical Energy কে AC Electrical Energy তে রূপান্তরিত করে Alternator বলে
02. এটি শুধুমাত্র AC তে অপারেশন করতে পারে
03. Magnetic Field ঘোরে
04. Stator থেকে input সরবরাহ করে
05. এটিতে Armature স্থির থাকে
06. Output EMF alternating
10. জেনারেটর এর লস সমূহ লেখ ও পাওয়ার ধাপগুলো দেখাও
ক.) কপার লস :
১. আর্মেচার কপার লস
২. ফিল্ড লস
৩. ব্রাশ কন্টাক্ট রেজিস্ট্যান্সের কারণে লস ।
খ.) ম্যাগনেটিক লস :
১. হিসটেরেসিস লস
২. এডি কারেন্ট লস
গ.) মেকানিক্যাল লস :
১. ব্রাশ ও বিয়ারিং ঘর্ষণজনিত লস
২. এয়ার ফ্রিকশন লস ।
আরো পড়তে পারেন: সোলার করোনা কি?
11. একটি 4 পোল ডিসি জেনারেটরের ল্যাপ ওয়াইন্ডিং এর ক্ষেত্রে ব্রাশের সংখ্যা কত ?
উত্তর : ল্যাপ ওয়াইন্ডিং এর ক্ষেত্রে পোল সংখ্যা এবং ব্রাশ সংখ্যা সমান । সুতরাং , ব্রাশ সংখ্যা = 4 ।
ডিসি জেনারেটরের নেমপ্লেটে কী কী তথ্যাদি থাকে ?
01. পাওয়ার ফ্যাক্টর 04. রেটেড কারেন্ট
02. ইফিসিয়েন্সি 05. রেটেড ভোল্টেজ
03. টর্ক 06. ফ্রিকুয়েন্সি ।
একটি DC Generator- এ কমুটেটর ও ব্রাশ কী কাজ করে ?
কমুটেটর: রেকটিফায়ারের মত কম্যুটেটর এসিকে ডিসিতে রূপান্তর করে অর্থাৎ কমুটেটরের প্রধান কাজ হলো অল্টারনেটিং কারেন্টকে ডাইরেক্ট কারেন্টে রূপান্তরিত করা । শক্ত তামার পুরু পাত বা বার ( Bar ) পর পর সাজিয়ে বেলুনাকারের কমুটেটর তৈরি করা হয় । পুরু পাত বা বারকে সেগমেন্ট (Segment) বলে । দুই সেগমেন্টের মধ্যে পাতলা মাইকা শিটের ইনসুলেশন দেওয়া থাকে , যাতে কারেন্ট এক সেগমেন্ট হতে অন্য সেগমেন্টে প্রবাহিত হতে না পারে ।
অতঃপর আর্মেচার কোরের সাথে একই শ্যাফটের উপর এই কমুটেটরকে বেশ শক্ত করে বসানো হয় এবং আর্মেচার কয়েলের শেষ প্রান্ত এক একটি সেগমেন্টের সাথে ঝালাই করে দেয়া হয়। আর্মেচার যখন ঘোরে , তখন কমুটেটরও তার সাথে ঘুরতে থাকে । আর্মেচার ওয়াইন্ডিং হতে কারেন্ট কয়েলের প্রান্ত বেয়ে কমুটেটর সেগমেন্টে এবং সেই সেগমেন্ট ব্রাশের ভিতর দিয়ে এই কারেন্ট বাহিরের সার্কিটে আসে ।
ব্রাশ: ঘুরম্ভ কমুটেটর হতে কারেন্ট সংগ্রহ করে বাহিরের সার্কিট প্রেরণ করাই ব্রাশের কাজ । বিশুদ্ধ কার্বন দ্বারা ব্রাশ তৈরি করা হয় , তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে কার্বনের সাথে কিছু ধাতব – চূর্ণও মিশ্রিত করা হয় । যদিও তামার তুলনায় কার্বনের রেজিস্ট্যান্স বেশি , তবুও ব্রাশের জন্য কার্বনকে নির্বাচিত করা হয়েছে।
এর কারণ দুটি , যথা
01. কমুটেটরের সাথে ঘর্ষণের ফলে কার্বনের ক্ষয় কম হয় ।
02. কার্বনের টেম্পারেচার কোইফিসিয়েন্ট নেগেটিভ বিধায় ঘর্ষণের ফলে তাপের সৃষ্টি হয় এবং কার্বনের রেজিস্ট্যান্স কমে যায় ।
12. একটি DC জেনারেটরের গঠন এবং কার্যপ্রণালি সংক্ষেপে আলোচনা করুন।
DC Generator: এটি এমন একটি মেশিন , যা যান্ত্রিক শক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তর করে । এর মাধ্যমে আমরা Current উৎপাদন করে থাকি । ডিসি জেনারেটরের বিভিন্ন অংশ ।
01. ইয়ক বা ফ্রেম 05. আর্মেচার ওয়াইন্ডিং
02. পোল কোর এবং পোল সু 06. কমুটেটর
03. ফিল্ড কয়েল 07. ব্রাশ এবং বিয়ারিং
04. আর্মেচার কোর
কার্যপ্রণালি : যখন কোনো Conductor বা পরিবাহী তার চৌম্বক ফ্লাক্সকে বার বার অতিক্রম করবে বা কাটবে তখন EMF তৈরি হবে । তখন যদি Circuit- টি close থাকে তখন EMF- এর কারণে External circuit- এ load- এর Across- এ Voltage drop হবে এবং Current flow হবে । এই EMF ও Current , conductor- এর মধ্যে কোন দিক থেকে কোন দিকে প্রবাহিত হবে তা আমরা “ Fleming’s right hand rule ” দ্বারা বের করতে পারি ।
13. AC generator কীভাবে কাজ করে , তা চিত্রসহ ব্যাখ্যা করুন ।
উত্তর : ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইন্ডাকশনের ( Electromagnetic Induction ) মূলতত্ত্বের উপর ভিত্তি করেই অল্টারনেটর বা এসি জেনারেটর তৈরি করা হয় । ডিসি জেনারেটরের মতো অল্টারনেটরেও আর্মেচার এবং ফিল্ড থাকে । বড় বড় অল্টারনেটরে ফিল্ড ঘুরে এবং আর্মেচার স্থির থাকে । অল্টারনেটরের আর্মেচারের ওয়াইন্ডিং একটি স্থির কাঠামোর খাজের ভিতর বসানো থাকে , একে স্ট্যাটর বলে । আর মেশিনের ফিল্ড কয়েল একটি ঘুরন্ত কাঠামোর উপর বসানো থাকে , একে রোটর বলে ।
একটি ঢালাইলোহার ফ্রেমের সাথে আর্মেচার বা স্ট্যাটরের কোর আটকানো থাকে । কোরের ভিতরের দিকে ( Inner Periphery ) যে – সব খাঁজকাটা থাকে , তার মধ্যেই আর্মেচারের ওয়াইন্ডিং বসানো হয় । রোটর অনেকটা ফ্লাইহুইলের ( Flywheel ) মতো দেখায় । এর বাইরের দিকে ( Outer Rim ) পর্যায়ক্রমে নর্থ ( North ) ও সাউথ ( South ) পোলগুলো বসানো থাকে । পোলের গায়ে জড়ানো কয়েল দিয়ে ডিসি সাপ্লাই থেকে 125 কিংবা 250 ডোল্টে কারেন্ট প্রবাহ হয় ।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ডিসি সাপ্লাই এর জন্য রোটরের শ্যাফটের সঙ্গে আঁটা একটি ছোট শান্ট । জেনারেটর ব্যবহার করতে দেখা যায় , একে এক্সাইটার বলে । এক্সাইটার থেকে কারেন্ট ব্রাশ ও স্লিপ রিং হয়ে ফিল্ড কয়েলে যায় । যেহেতু এ কারেন্টের পরিমাণ কম ও নিম্ন ভোল্টেজে তা সরবরাহ করা হয় , সেহেতু অপেক্ষাকৃত পাতলা ব্রাশ ও স্লিপ রিং ব্যবহার করলেই কাজ চালানো যায় ।
রোটর ঘুরতে আরম্ভ করলে সে সঙ্গে চুম্বক বলরেখাও ঘুরতে থাকে । ঘুরন্ত চুম্বক বলরেখা যখন স্ট্যাটরের খাঁজে বসানো পরিবাহীগুলোকে ছেদ করে , তখন ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক ইন্ডাকশনের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি পরিবাহীতে ইএমএফ ( EMF ) আবিষ্ট হয় । আবিষ্ট ইএমএফ – এর অভিমুখ ফ্লেমিং – এর দক্ষিণ হস্ত নিয়ম ( Fleming right hand rule ) থেকে জানা যায় ।
এ নিয়ম প্রয়োগ করলে দেখা যায় , কোনো পরিবাহীর সামনে যখন নর্থ পোল এসে দাঁড়ায় , তখন আবিষ্ট ইএমএফ এবং কারেন্ট যে অভিমুখে কাজ করে , সাউথ পোল এসে দাঁড়ালে কাজ করে ঠিক তার বিপরীত অভিমুখে । ফলে আর্মেচারে আবিষ্ট ইএমএফ এবং সেই সঙ্গে কারেন্ট অল্টারনেটিং হয় ।
I am very interested for this information