ব্লকচেইন প্রযুক্তি নিয়ে কথা আগে আপনাকে কিছু তথ্য দিয়ে রাখি । আমাদের বর্তমান আর্থিক ব্যবস্থাপনায় চুক্তি, লেনদেন এবং এই ধরনের রেকর্ডগুলির ডিজিটাল নিরাপত্তা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সারা বিশ্বে অন্যান্য খাত যেভাবে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়েছে ঠিক তার উল্টো দিকের চিত্র ব্লকচেইন প্রযুক্তি এর অগ্রগতিতে । এই খাত ডিজিটাল প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলেনি। কিন্তু আমরা শুধু প্রফিট নিয়ে চিন্তা করাই প্রযুক্তির নিরাপত্তার ব্যাপারটাই ভালোভাবে মাথায় রাখিনি। আর প্রযুক্তির নিরাপত্তার কথা না ভাবার কারণে এর ফলাফল কি হতে পারে আমরা তা অনেক বারই চোখে দেখেছি বা প্রমাণ পেয়েছি।
ব্লকচেইন প্রযুক্তি – Blockchain Technology
আসুন আমরা বিটকয়েনের তৈরির পেছনের প্রযুক্তি দিকে তাকাই, ব্লকচেইন হল একটি উন্মুক্ত প্রযুক্তি । ব্লকচেইন প্রযুক্তি তার ডাটাবেজে যে কোন তথ্য নিরাপদে, স্থায়ীভাবে এবং অত্যন্ত দক্ষতার সাথে রেকর্ড করে রাখে । ঠিক এই প্রযুক্তিটি বিটকয়েন এ ব্যবহার করা হয়েছে । উদাহরণস্বরূপ, বর্তমানে আমাদের Stock-স্টকের একটি শেয়ার স্থানান্তর করতে এক সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। কিন্তু ব্লকচেইনের মাধ্যমে এটি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সম্পূর্ণ করা সম্ভব ।
শুধু তাই নয়, এই প্রযুক্তি লেনদেনের খরচও কমাতে পারবে । সকল প্রকার আর্থিক লেনদেনে আইনজীবী ও ব্যাঙ্কারদের মতো মধ্যস্থতাকারীদের নির্মূল করতে পারবে। এর ফলে আমাদের অর্থনীতিতে আমুল পরিবর্তন আসবে। কিন্তু, ব্লকচেইন প্রযুক্তি ইন্টারনেট সেবা গ্রহণের মতো। এই প্রযুক্তি গ্রহণের জন্য সকল মহলের সমন্বয় প্রয়োজন। তাই ব্লকচেইন প্রযুক্তির বাস্তবায়ন করতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে। এই আর্টিকেলে আমি, আপনাকে ব্লকচেইন প্রযুক্তি তে সাফল্য আনতে হলে যে পথ অনুসরণ করতে হবে অথবা ব্লকচেইন প্রযুক্তি কিভাবে আপনার নিজস্ব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে সংযুক্ত করবেন তা বর্ণনা করবো ।
ব্লকচেইন এর মূল আলোচনা !
উপরে যেমনটি বলছিলাম, আইন, রাজনীতি এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনায় অনেক ধরনের চুক্তি ,লেনদেন এবং গোপণীয় নথীপএ তৈরি হয়। আর এসব নথীপএ এর সংরক্ষণ করে রাখার গুরুত্ব অপরিসীম। এই সংস্থাগুলি মানুষের সম্পদ রক্ষা, সামাজিকতা এবং কাজের পরিধি নির্ধারণ করে। এবং একটি জাতি, সংস্থা, সম্প্রদায় এবং ব্যক্তিদের প্রায় সকল ধরনের কার্যকলাপের উপরে তারা সামাজিক ও আর্থিক সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে বর্তমানেও এই সকল কাজ সম্পাদন করার জন্য সনাতন বা পুরাতন পদ্ধতি এখনো অনুসরণ করা হচ্ছে। আমরা প্রযুক্তি ব্যবহারের ব্যাপারে যতটা দ্রুতগতিতে আগাচ্ছি এটার নিরাপত্তার ব্যাপারে ততটাই ধীরগতিতে আগাচ্ছি। এতে করে আমাদের তথ্য নিরাপত্তা দিন দিন হুমকির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আমাদের অর্থনীতির সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজেশনের জন্য অনেক ধরনের অবকাঠামো এর পরিবর্তন প্রয়োজন।
আর যেসব নিরাপত্তামূলক সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তি প্রয়োজন তার উন্নয়ন আমরা সম্পূর্ণ করতে পারিনি। ডিজিটাল প্রযুক্তির স্পিডের সাথে তাল মিলাতে হলে এইসব ক্ষেত্রে আমাদের অবকাঠামোর প্রযুক্তিগত উন্নয়ন অতি জরুরী।কিন্তু খুশির সংবাদ হলো ব্লকচেইন প্রযুক্তি এই তথ্য নিরাপত্তা সমস্যার সমস্যা সমাধানের জন্য নতুন পথ উন্মোচন করেছে। এই প্রযুক্তিটি বিটকয়েন এ ব্যবহার করা হয়েছে । শুধু বিটবয়েন নয় এই প্রযুক্তিটি অন্যান্য ডিজিটাল মুদ্র্যায় ও ব্যবহার করা হয়েছে।
ব্লকচেইন প্রযুক্তি কিভাবে কাজ করে ?
এটি হলো একটি উন্মুক্ত প্রযুক্তি। যার মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান বা আর্থিক লেনদেন করতে হলে একজন আরেকজনকে কয়েকটি মাধ্যমে ভেরিফিকেশন করতে হয় । ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ হলে তথ্য বা লেনদেন এর একটি নথী ২জনের কাছেই স্থায়ীভাবে সংরক্ষিত হয় , ঠিক এভাবেই ব্লকচেইন প্রযুক্তি তার কমিউনিটি তৈরি করে।বর্তমানে অথবা ভবিষ্যতে এই কমিউনিটিতে যদি কোন তথ্য পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় তবে কমিউনিটির বেশি সংখ্যক মেম্বারের অনুমতি প্রয়োজন হবে, এই অনুমতি দেওয়ার সিস্টেমটি হলো ভোটিং সিস্টেম। তাই হ্যাকার যদি কোন তথ্য পরিবর্তন করতে আসে তাহলে সে এই ভোটিং সিস্টেম এর কারনে তথ্য পরিবর্তন করতে ব্যর্থ হবে।
ব্লকচেইন কিভাবে আপনার নিজস্ব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে সংযুক্ত করবেন ?
বেশিরভাগের জন্য, প্রথমে শুরু করার সবচেয়ে সহজ জায়গা হল একক-ব্যবহার অ্যাপ্লিকেশন। এতে ঝুঁকি কম, কারণ আপনি নতুন নয় এই প্রযুক্তি খাতে এবং তৃতীয় পক্ষের বা মাধ্যমের সাথে সমন্বয় করতে জানেন। আরো একটি কৌশল হতে পারে আপনার প্রতিষ্ঠানে বিটকয়েনকে পেমেন্ট মেকানিজম হিসেবে গ্রহণ করা। দেখুন এই বিটকয়েন পেমেন্ট মেকানিজম আপনার কাছে কিছুটা নতুন মনে হলেও বর্তমানে বিটকয়েনের প্রযুক্তিগত অবকাঠামো এবং এর বাজার ইতি মধ্যেই ভালভাবে উন্নত । এই ভার্চুয়াল মুদ্রা গ্রহণ করতে পারলে আপনার প্রতিষ্ঠানে ব্লকচেইন প্রযুক্তির সক্ষমতা তৈরি হবে ।
এটা করতে পারলে আইটি, ফিনান্স, অ্যাকাউন্টিং, সেলস এবং মার্কেটিং সহ বিভিন্ন ধরনের সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান এই প্রযুক্তিতে ব্যবহার করতে বাধ্য হবে। আরেকটি কম-ঝুঁকির পদ্ধতি হল ব্লকচেইনকে অভ্যন্তরীণভাবে একটি ডাটাবেস হিসাবে ব্যবহার করা । যেমন আমরা এই অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ডিজিটাল তথ্য সংগ্রহ , অভ্যন্তরীণ লেনদেন রেকর্ড করা এবং ব্যবহারকারির পরিচয় যাচাই করতে পারি।অনেকগুলো কোম্পানি অভ্যন্তরীণ ডাটাবেস একসাথে শেয়ার করলে অন্য কোম্পানিগুলোর জন্য এটি একটি বিশেষভাবে কার্যকর সমাধান হতে পারে ব্যবসা এবং তথ্য নিরাপত্তার জন্য।
আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
বল্কচেইন টেকনোলজি অথবা আরো বিভিন্ন বিষয় যেমন, বিজ্ঞানের বিস্ময়কর সব আবিস্কার জানতে, আমাদের মহাবিশ্ব নিয়ে অজানা অনেক তত্ত্ব জানতে, ইলেকট্রিকাল এর খুটিনাটি সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুণ। আমাদের সকল আর্টিকেল বিজ্ঞান সম্মত।